আক্তারুজ্জামান, বিভাগীয় প্রধান(মার্কেটিং) বাঙলা কলেজ মীরপুর
২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, 8:42 PM
১ টি বেকারের কারখানা না করে ১০০টি কারিগরি স্কুল কলেজ করুন
সরকারি সাত কলেজকে অযথা একটি জগাখিচুড়ি মার্কা ইউনিভার্সিটি বানিয়ে সরকারি ৫৪ তম ভার্সিটির প্রয়োজন নেই- এ নিয়ে লেখালেখির পর আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়ায় আমি কিছুটা শংকিত। মিরপুর থানায় একটি জিডি করবো। আইডি ফেক হলেও এর আড়ালে 'মবসন্ত্রাসীদের' কেউ থাকতে পারে।
সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি গঠনে সাত কলেজের গুটিকয়েক শিক্ষার্থীর যে উগ্র মনোভাব তাতে শিক্ষার নীতিনির্ধারকদেরই এতে হস্তক্ষেপ করতে হবে। তাই প্রস্তাবিত সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি নিয়ে আমার এটাই শেষ লেখা। শিক্ষার নীতিনির্ধারকদের কাছে অনুরোধ আপনারা এই মবসন্ত্রাস এবং দুয়েকজন উচ্চাকাঙ্ক্ষী ষড়যন্ত্রকারীর ফাঁদে পা দেবেন না।
সরকারি ৫৩ টি বিশ্ববিদ্যালয় থাকার পরও আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয় কেন বানাতে হবে, এই টাকা দিয়ে ১০০টি কারিগরি কলেজ করুন। শিক্ষার্থীদের কারিগরি শিক্ষা দিন। দক্ষ কর্মী করে বিদেশে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিন। ৫৩ টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটিও ওয়ার্ল্ড র্যাংকিংয়ে নেই। আরেকটি বেকার তৈরির কারখানা গড়তে চান কেন | আর করতেই যদি হয় সুদুর গ্রামে গিয়ে করেন। আমার একটি কারিগরি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় করার স্বপ্ন আছে। আমাকে সহায়তা দিন। একটি অদ্ভূত প্রস্তাব এই সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয়! ট্রল করে কেউ কেউ 'এআর' বা আব্দুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ও বলে থাকে।
উচ্চমাধ্যমিক পাঠদান রেখে, সাত কলেজে সাত অনুষদ করে, ইডেন কলেজ-বদরুন্নেছা কলেজের মত শত বছরের নারী শিক্ষার পীঠস্থানগুলোতে ছাত্রদের প্রবেশ করিয়ে, ৪০% -৬০% অনুপাতে অনলাইন অফলাইনে ক্লাশ করিয়ে, পিএইচডি ডিগ্রিধারী শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে, বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের শিক্ষকদের গণবদলি করে, বিদেশি কিছু শিক্ষককে ভাড়ায় এনে, নিজেরা গুরুত্বপূর্ণ ভিসি, প্রোভিসি, রেজিস্ট্রার পদে বসার লোভে ঢাবি'র দুজন শিক্ষকের প্ররোচনায় কতিপয় শিক্ষার্থীর 'মব সন্ত্রাস' ইস্যুটিকে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে। শিক্ষার্থীরা আলটিমেটাম দিয়ে রেখেছে সোমবারের মধ্যে অধ্যাদেশ জারির সুস্পষ্ট রোডম্যাপ জারি না হলে তারা বৃহত্তর আন্দোলনে যাবে।
এই আন্দোলনে যে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোনোই সমর্থন নেই তা বুঝার মত জ্ঞান এই গুটিকয়েক শিক্ষার্থীর নেই। ইডেন কলেজের এক সাধারণ শিক্ষার্থীর মতামতটি গুরুত্বপূর্ণ বিধায় লেখাটি হুবহু তুলে ধরলাম।
আমলাদের শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নত করা নিয়ে কখনো ভালো কিছু করার পরিকল্পনা ছিলো না, এখনো নেই। যদি থাকতো তবে তা কলেজগুলিতে অনেক আগে থেকেই করা কোনো ব্যাপারই ছিল না। মানসম্মত সাইন্স ল্যাব, রিসার্চ সেন্টার, সফটওয়্যার সাপোর্ট এগুলো যারা বিগত ৫০বছরে দেননি তারা আর যাই হোক ছাত্র ছাত্রীদের জন্য ভাবেন না। এখন এসব মূলা ঝুলিয়ে তারা তাদের সুবিধা আদায় করতে ছাত্র ছাত্রীদের কে ইউজ করছে।
কারন প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি তে ছাত্র সংখ্যা বাড়াতে হবে যেটা তাদের জন্যে লাভ হলেও তোমাদের গ্রামের গরীব সহপাঠীর উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন পূরণ নাও হতে পারে। কারন আসন সংখ্যা সীমিত করলে তারা সুযোগ কম পাবে। আর উচ্চবিত্ত রা প্রাইভেট এ বেশি করে যাবে। এটা একটা বিজনেস প্লান। কিন্তু আমি জানি ভালো শিক্ষক, উন্নত ল্যাব আরো আধুনিক সুবিধার বিষয় গুলো আগামী দশ বছরেও বাস্তবায়ন করা হবে না।
তোমরা শুধু শুধু সময় নষ্ট করে অন্যের এজেন্ডা কেন বাস্তবায়ন করছ| এখানে তোমাদের সুযোগ সুবিধার কোন পরিবর্তন হবেনা, আগের থেকে খারাপ ও হতে পারে আগামী 3/4 বছর। কারন আমলাতন্ত্রিক জটিলতা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে গিয়ে যা আশা করেছিলে তা কি পেয়েছিলে? আমি ইডেন কলেজে পড়েছি এবং এটা নিয়ে গর্বিত।