ঢাকা ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম
Marriage Notice দূর্নীতির বহুমাত্রিক অভিযোগ জাতীয় গৃহায়ণ প্রশাসকের বিরুদ্ধে ২০২৬ সালে যাত্রা শুরু করছে ‘ডা: ইদ্রিস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল’ পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ এক লটে ৭০৩ সরঞ্জাম: দরপত্রে ক্রয় আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ সাজানো মিথ্যে মামলায় জেল হাজতে খোকন সেখ: ফরিদ গঞ্জে ক্ষাভ টেকসই উন্নয়নে ফিলানথ্রপি উদ্যোগের ভূমিকা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত রেলওয়েকে লাভজনক করতে উদ্যোগ চলতি বছরে জরিমানা আদায় ২২ কোটি টাকার বেশি তদন্তের মুখেও জৌলুশ বাড়ছে গণপূর্তের প্রকৌশলী স্বপন চাকমার দি ইবনেসিনা ফার্মাসিউটিক্যাল এর ৪১তমবার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত ২০২৫-২৬ কর বছরের আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় এক মাস বাড়ালো জাতীয় রাজস্ব বোর্ড

৭ বছরে শত কোটি টাকার মালিক মাছ বিক্রেতার ছেলে রাজউকের ইমারত পরিদর্শক নির্মল মালো

#

নিজস্ব প্রতিবেদক

১১ নভেম্বর, ২০২৫,  1:47 PM

news image


রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) যেন স্বর্ণের খনি অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী কয়েক বছর চাকরি করেই হয়ে গেছেন শত শত কোটি টাকার মালিক, বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে  ঘুষ দুর্নীতির  শত শত অভিযোগ কিন্তু অদৃশ্য কারণে অধিকাংশ 

অভিযোগ কখনো কার্যকর হয় না কারণ অবৈধ অর্থ দিয়ে সবকিছু ম্যানেজ করে ফেলেন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, ৭ বছরে ইমারত পরিদর্শক পদে চাকরি করে শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন নির্মল মালো। 

বিগত সরকারের আমলে শুধু গোপালগঞ্জ টুঙ্গিপাড়ার অধিকাংশ বাসিন্দারা সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে চাকরিতে যোগদান করেই নেমে পড়তেন অনিয়ম দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্যে এদের বিরুদ্ধে ভয় কেউ মুখ খুলতো না অধিকাংশ অভিযোগ কখনো কার্যকর হতো না,

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রাজউকের ইমারত পরিদর্শক নির্মল মালোর বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক অভিযোগ লিখিত মৌখিক ও ঘুষ দুর্নীতির টাকায় সাত বছরের বনে গেছেন শত কোটি টাকার মালিক কিন্তু এত অভিযোগ থাকার পরও কোন এক অদৃশ্য কারণে তিনি আছেন বহাল তবিয়তে। 


গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার পৌরসভার মাছ বিক্রেতা নিত্য মালোর ছেলে নির্মল মালো ছিল ভবঘুরে বেকার ২০১৮ সালে গোপালগঞ্জের একজন প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতার সুপারিশে ছাত্রলীগের কোঠায় রাজউকের ইমারত পরিদর্শক পদে চাকরিতে যোগদান করেন,

অভিযোগ আছে নিয়ম বহির্ভূতভাবে তার চাকরি হয়েছিল এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি চাকরিতে যোগদান করেই নেমে পড়েন ঘুষ দুর্নীতি সহ নানা অপরাধে বিভিন্ন ভবন মালিকদের কে জিম্মি করে  প্রতিনিয়ত আদায় করেন মোটা অংকের ঘুষ।

অভিযোগ আছে ভূমি ব্যবহারের ছাড়পত্র, নকশা অনুমোদন থাকলেও ঘুষ দিতে হয়, না দিলে ভবন ভাঙ্গার ভয় দেখানো হয়।

আবার অনেক সময় ভবন মালিকরা নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে ভবন নির্মাণ করলেও অর্থ দিয়ে ম্যানেজ করে ফেলেন এরকম একাধিক অভিযোগ রয়েছে নির্মল মালের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনুসন্ধান ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যে জানা যায় 

রাজউকের জোনাল অফিস- ৪/৩ এর আওতাধীন দক্ষিণ খান এলাকার আর্মি সোসাইটি রোড, চালাবন, নোয়াপাড়া, আমতলা, কালভার্ড কেন্দ্রীয় শাহী মসজিদ  আইনুছ বাগ, কলেজ রোডের একাধিক ভবন নকশার ব্যত্যয় ঘটিয়ে

নিয়মবহির্ভূতভাবে নির্মাণের অভিযোগ ছিল  এসব ভবনের সামনে ছিলনা  সাইনবোর্ড নেই। নির্মান শ্রমিক ও পথচারীদের নিরাপত্তার জন্য নেওয়া  হয়নি সেফটিনেট। ভবনের চতুরপার্শ্বে ইচ্ছেমতো নকশা বিচ্যুতি (ডেভিয়েশন) করে নির্মান করা হয়েছিল, কিন্তু  নির্মাণ সাইট পরিদর্শনকালে ভবন নির্মাণে 

ভবন মালিকদের কাছ থেকে ইমারত পরিদর্শক   নির্মল মালো লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন, আবার সমস্ত অনুমোদন থাকার পরও একাধিক মালিককে ভবন ভাঙার ভয় দেখিয়ে উপর মহলে টাকা দেওয়ার কথা বলে লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ নিয়েছেন তিনি গতবছর

একাধিক ভবন মালিক রাজউকের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন কিন্তু কোন এক অদৃশ্য কারণে তা কার্যকর হয়নি, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ভবন মালিক বলেন আমার কাছ থেকে এই নির্মল মালো সমস্ত অনুমোদন থাকার পরও বিভিন্ন ভয়-ভীতি দেখিয়ে পাঁচ লক্ষ টাকা ঘুষ নিয়েছে যার তথ্য প্রমাণ আমার কাছে সংরক্ষিত আছে।    

রাজউকে মাত্র ৭ বছর চাকরি করে ঘুষ দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ অর্থে বানিয়েছেন বিশাল সম্পদ বাবার ভাঙ্গা টিনের ঘর ভেঙে নির্মাণ করেছেন পাকা বিল্ডিং, মাছ বিক্রেতা বাবা নিত্য মালোকে প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ টাকা দিয়ে বানিয়েছিলেন উপজেলা মৎস্যজীবী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সেই প্রভাবে হয়ে উঠেছিলেন আরো ক্ষমতাধর।

কোটালীপাড়া পৌরসভার বাগান উত্তর পাড়া গ্রামে ১০ কাঠা জমির ওপর নির্মাণ করেছেন ডুপ্লেক্স বাড়ি ইতিমধ্যে বাড়ি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে কয়েক কোটি টাকা, যা সাংবাদিকের কাছে নিত্য মালোর মা অকপটে স্বীকার করেন বলেন এটা নিত্য মালোর একার বাড়ি।


রাজধানী ঢাকার আফতাব নগরের ডি-ব্লকের ৫ নম্বর সড়কের লেকভিউ কটেজের সি-২, ফ্লাট প্রায় ১ কোটি টাকা দিয়ে  নিজের নামে ক্রয় করেছেন, ওই বাড়ির কেয়ারটেকারের কাছে জানতে চাইলে বলেন স্যার একটু আগে গাড়ি নিয়ে বের হয়ে গেছেন, তবে সাংবাদিক শুনে কেয়ারটেকার বলেন আমি কিছু বলতে পারব না, চলাচলের জন্য রয়েছে গাড়ি ও একাধিক মোটরসাইকেল।

এছাড়া উঠে আসে একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ ও এলাকাবাসী বলেন পৌরসভার উত্তর পাড়ায় ২০ বিঘা জমির ওপর পোল্ট্রি ফার্ম, কান্দি ইউনিয়নের আমবাড়িতে ৪০ বিঘা জমির ভেতর মাছের ঘের, উজিরপুরের সাতলায় ৩৫ বিঘা জমির মাছের ঘের সহ বিভিন্ন এলাকায় নামে বেনামে জমি ক্রয় করেছেন । 


কোটালীপাড়ায় রয়েছে ক্যাফে জয়বাংলা নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

আরো  সম্পদের তালিকায় রয়েছে কুড়িল বিশ্ব রোড়ে প্লট ও ওয়ারী এবং মগবাজারে ফ্ল্যাট রয়েছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে তবে অধিকাংশ সম্পদ ক্রয় করেছেন স্ত্রী উর্মি সাহা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যের নামে, শুধুমাত্র  আইনের চোখ ফাঁকি দেওয়ার জন্য। তার স্ত্রী উর্মি সাহা একসময় আরং এ চাকরি করতেন।

রাজউকের বেশ কয়েকজন কর্মচারী বলেন নির্মল মালো স্যার ইংল্যান্ডের একটি বিদেশি সিগারেট খান যার প্রতি কার্টুনের দাম ৪ হাজার টাকা আনুমানিক মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকার সিগারেট লাগে, অথচ তিনি কত বেতন পান

নির্মল মালো চলতি দায়িত্বে রাজউক মহাখালী জোনে( ৪/৩) ইমারত পরিদর্শক পদে কর্মরত। রাজউকের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা কর্মচারী নাম প্রকাশ না করে বলেন অনেক খেয়াল খুশি মত চলেন ঠিকমতো অফিসে আসেন না, আর ওনার বিরুদ্ধে ঘুষ দুর্নীতির অভিযোগ এগুলো নতুন কিছু নয় এর আগেও একাধিকবার তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সংবাদ প্রকাশ হয়েছে কিন্তু তিনি অবৈধ অর্থ দিয়ে উপর মহলকে সবকিছু ম্যানেজ করে ফেলেন। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুদকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন শুধুমাত্র অভিযোগের আলোকে দুদক অনুসন্ধান করে বিষয়টি সঠিক নয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সকল তথ্য গুরুত্ব সহকারে পর্যালোচনা করে তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চালানো হবে।

ঠিকমতো অফিসে না আসা ভবন মালিকদের জিম্মি করে অবৈধ অর্থ উপার্জন, একাধিক অভিযোগপত্র ও প্রকাশিত গণমাধ্যমের সংবাদসহ সকল  বিষয়ে জানতে চাইলে অথরাইজড অফিসার পারভেজ কায়সার কাছেও একাধিক বার গেলে তাকে পাওয়া যায়নি এবং ফোনে যোগাযোগ করলে সাংবাদিক শুনে তিনিও ফোন কেটে দেন।

সামান্য দশম গ্রেডে চাকরি করে মাছ বিক্রেতার ছেলে ইমারত পরিদর্শক নির্মল মালো কিভাবে এত অর্থের মালিক হলেন সেই প্রশ্নের উত্তর জানতে তার অফিসে একাধিক বার গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি ও মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কোন উত্তর দেননি এবং তার সহকর্মীরা বলেন উনি ঠিকমত অফিস করে না কোন এক অদৃশ্য ক্ষমতার বলে। 

ইমারত পরিদর্শক নির্মল মালোর অনিয়ম দুর্নীতি ও অবৈধ অর্থে সম্পদের আরো তথ্য নিয়ে আসছে দ্বিতীয় পর্ব।

logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ জাহিদুল ইসলাম