ঢাকা ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম
Marriage Notice দূর্নীতির বহুমাত্রিক অভিযোগ জাতীয় গৃহায়ণ প্রশাসকের বিরুদ্ধে ২০২৬ সালে যাত্রা শুরু করছে ‘ডা: ইদ্রিস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল’ পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ এক লটে ৭০৩ সরঞ্জাম: দরপত্রে ক্রয় আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ সাজানো মিথ্যে মামলায় জেল হাজতে খোকন সেখ: ফরিদ গঞ্জে ক্ষাভ টেকসই উন্নয়নে ফিলানথ্রপি উদ্যোগের ভূমিকা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত রেলওয়েকে লাভজনক করতে উদ্যোগ চলতি বছরে জরিমানা আদায় ২২ কোটি টাকার বেশি তদন্তের মুখেও জৌলুশ বাড়ছে গণপূর্তের প্রকৌশলী স্বপন চাকমার দি ইবনেসিনা ফার্মাসিউটিক্যাল এর ৪১তমবার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত ২০২৫-২৬ কর বছরের আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় এক মাস বাড়ালো জাতীয় রাজস্ব বোর্ড

টক অব দ্যা এনবিআর এখন ভ্যাট ও গোয়েন্দা বিভাগের ডিজি জাকির হোসেনের দূর্নীতি

#

বিশেষ প্রতিবেদক

০৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫,  7:30 PM

news image


 এনবিআরসহ  সংশ্লিষ্ট মহলে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ঘুরপাক খাচ্ছে  ভ্যাট ও গোয়েন্দা বিভাগের ডিজি মুহাম্মদ জাকির হোসেনের মহাদূর্নীতির নানা কাহিনী। যাকে অনেকেই আলোচিত ছাগল কান্ডের মতিউরের দূর্নীতিকে ছাপিয়ে যাওয়ার সাথে তুলনা করছেন। ছাগল কান্ডের মাধ্যমে সামনে আসা সে কাহিনীর পর মহা প্রতাপশালী মতিউর রহমান এখন কারাগারের অন্ধ প্রকোষ্ঠে থাকলেও জাকির হোসেনের গায়ে এখনো কোন ফুলের টোকা পড়েনি। দু জনই নরসিংদীর কৃতি সন্তান হওয়ায় আলোচনায় নতুন রস যোগ হয়েছে। 

 এনবিআরের উর্ধবতন থেকে শুরু করে নীচের লেভেলে এখন  আলোচনা ঘুরপাক খাচেছ বনানী ক্লাবে জাকির হোসেনের সম্পৃক্ততার কাহিনী । মহাদূর্নীতিবাজ পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীরের বোটক্লাব কেলেঙ্কারির পর এবার সামনে আসছে   ভ্যাট গোয়েন্দার বর্তমান ডিজির বনানীক্লাবে সম্পৃক্ততার কাহিনী। একজন সরকারি কর্মকর্তা অভিজাত এমন এবটি ক্লাবে সদস্য হওয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলার আইনী ভিত্তি নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে এ বিষয়ে কোন ভাবেই মুখ খুলতে নারাজ আলোচনায় আসা জাকির হোসেন। 

গণমাধ্যমের  হাতে আসা তথ্য থেকে দেখা যাচ্ছে  জাকির হোসেন সরকারি চাকরি বিধি লঙ্ঘন করে অবৈধ উপায়ে কোটি কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন, যার বেশিরভাগই তার স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের নামে। দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাস্টমস হাউজে কর্মরত থাকাকালে তিনি দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য তৈরি করেছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, মুহাম্মদ জাকির হোসেনের সম্পদের পরিমাণ তার বৈধ আয়ের সঙ্গে মোটেও সঙ্গতিপূর্ণ নয়। একটি অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি ২০২২ সালের ৪ সেপ্টেম্বর ৩০ লাখ টাকা ব্যয় করে বনানী ক্লাবের সদস্যপদ গ্রহণ করেন।

সরকারি চাকুরি বিধিমালা অনুযায়ী, এটি একটি গুরুতর অনিয়ম। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, তিনি ২০২৩-২৪ করবর্ষে এই ৩০ লাখ টাকার কোনো হিসাব তার ট্যাক্স ফাইলে প্রদর্শন করেননি। এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তাকে তলব করেছিল, তবে পরবর্তীতে কোনো ব্যবস্থা  নিতে দেখা যায়নি।

ঢাকার কাস্টমস কমিশনার থাকাকালীন মুহাম্মদ জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি এই প্রকল্পের কাজ তার নিকট আত্মীয়দের নামে দিয়েছেন এবং সরকারি তহবিলের বিপুল অর্থ অপচয় করেছেন। একটি সংবাদে উল্লেখ করা হয়, তার শ্যালকের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ৪০ হাজার টাকার একটি এসি ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায় কেনা হয়েছে, যা স্পষ্টতই অর্থ আত্মসাতের একটি দৃষ্টান্ত।

দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত “গোল্ডেন মনির”-এর সঙ্গে কাস্টমস কমিশনার জাকির হোসেনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের অভিযোগও রয়েছে। অভিযোগ অনুসারে, মনিরের বাড়িতে অভিযান শুরুর ঠিক আগে তার বাসায় বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ অর্থ সরিয়ে নেওয়া হয়, যার একটি বড় অংশ জাকির হোসেন ও তার স্ত্রী আত্মসাৎ করেন।  অভিযোগ রয়েছে যে, তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ধামাচাপা দিতে তিনি বিভিন্ন সংবাদকর্মীকে আর্থিক সুবিধা দিয়েছেন।

 তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ঢাকার বিমানবন্দরে সোনা নিয়ে আটক হওয়ার অভিযোগ উঠেছে, যা তার সোনা চোরাচালানে জড়িত থাকার ইঙ্গিত দেয়। যশোর ভ্যাট কমিশনার থাকাকালীন তিনি কালো টাকা উপার্জনের জন্য বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে অডিটের ভয় দেখাতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। মুহাম্মদ জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে ওঠা এসব অভিযোগের তদন্ত চলমান রয়েছে। তার গ্রামের বাড়ি নরসিংদী এবং বর্তমান  ঠিকানা বনানী। বিভিন্ন কর্মস্থলে তিনি যেখানেই গেছেন, সেখানেই দুর্নীতির পাহাড় গড়ে তুলেছেন বলে অভিযোগ।

তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি। ভ্যাট ও গোয়েন্দা বিভাগের কমিশনার মুহাম্মদ জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ এখন কেবল গুঞ্জন নয়, বরং একের পর এক প্রকাশিত তথ্যে তা যেন এক ভয়াবহ বাস্তবতায় রূপ নিয়েছে। এই প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মচারী কীভাবে ক্ষমতার সর্বোচ্চ অপব্যবহার করে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ গড়ে তুলেছেন, তার এক কদর্য চিত্র এখন জনসম্মুখে।

যেখানেই তিনি পা রেখেছেন, সেখানেই গড়ে তুলেছেন দুর্নীতির এক বিশাল সাম্রাজ্য, আর এর শিকার হচ্ছে রাষ্ট্রের নিরীহ জনগণ। মুহাম্মদ জাকির হোসেনের সম্পদের পরিমাণ তার বৈধ আয়ের সঙ্গে কোনোভাবেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। সূত্র তিনি কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে সেই অর্থ স্ত্রী ও নিকটাত্মীয়দের নামে রেখেছেন।

সবচেয়ে জঘন্য ঘটনা হলো, ২০২২ সালে ৩০ লাখ টাকা খরচ করে বনানী ক্লাবের সদস্যপদ নিলেও, ২০২৩-২৪ করবর্ষে সেই টাকার কোনো হদিস তিনি তার ট্যাক্স ফাইলে দেখাননি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।  সরকারি চাকরি বিধিমালাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এই ধরনের কর্মকান্ডের প্রেক্ষিতে  দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তাকে তলব করেছে ঠিকই, কিš‘ কোন কারণে তার বিরুদ্ধে   এখনো  ব্যবস্থা  নেওয়া হয়নি। যা নিয়ে  জনমনে প্রশ্ন দানা বাঁধছে।

ঢাকার কাস্টমস কমিশনার থাকাকালীন তার বিরুদ্ধে ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পে ব্যাপক লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ অনুসারে, তিনি প্রকল্পের কাজ নিজের শ্যালকের মতো ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের প্রতিষ্ঠানকে দিয়েছেন এবং সরকারি কোষাগারের বিপুল অর্থ লোপাট করেছেন।

৪০ হাজার টাকার একটি এসি ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায় কিনে জনগণের টাকাকে কীভাবে হরিলুট করা হয়েছে, তা স্পষ্টতই প্রমাণ করে যে, তিনি রাষ্ট্রীয় সম্পদকে নিজের ব্যক্তিগত সম্পত্তি মনে করেছেন। যিনি রাষ্ট্রের রাজস্ব সুরক্ষায় নিয়োজিত, তিনিই কি না জড়িয়ে পড়েছেন সোনা চোরাচালানের মতো গুরুতর অপরাধে! অভিযোগ রয়েছে, তার স্ত্রী ঢাকার বিমানবন্দরে সোনা নিয়ে আটক হয়েছিলেন।

এখানেই শেষ নয়, দুর্নীতির কুখ্যাত কারিগর “গোল্ডেন মনির”-এর সঙ্গে তার যোগসাজশ এখন ওপেন সিক্রেট। মনির-এর বাড়িতে অভিযানের আগেই বিপুল পরিমাণ সোনা ও নগদ অর্থ সরিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে, যার একটি বড় অংশ জাকির হোসেন এবং তার স্ত্রী আত্মসাৎ করেছেন। 

এ সকল বিষয় জানতে জাকির হোসেনের মোবাইল ফোনে ফোন করলে তা বন্ধ পাওযা যায়। হোয়াটসঅ্যাপে মতামত চেয়ে বার্তা পাঠালেও তাতে তিনি কোন সাড়া দেননি। 


logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ জাহিদুল ইসলাম