নিজস্ব প্রতিবেদক
১৯ নভেম্বর, ২০২৫, 12:52 PM
বসতঘর থেকে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার: চিরকুটে ‘মানসম্মান হারানোর’ কথা
পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় এক বসতঘর থেকে স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরিবারের দাবি, গলায় ফাঁস দিয়ে তারা আত্মহত্যা করেছেন।
তবে কী কারণে দম্পতি জীবনাবসান বেছে নিলেন—তা এখনও স্পষ্ট নয়। মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের উত্তর চালিতাবুনিয়া গ্রাম থেকে রাকিব প্যাদা (৩০) ও তার স্ত্রী সোহাগী বেগমের (২৫) মরদেহ উদ্ধার করে রাঙ্গাবালী থানা পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, নিহত দম্পতির ঘর থেকে একটি ডায়েরি উদ্ধার করা হয়েছে। ডায়েরির দুই পাতায় স্বামী-স্ত্রীর স্বাক্ষরিত একটি চিরকুট পাওয়া যায়। সেখানে লেখা ছিল
“মানসম্মান সব গেছে। বাঁচা থাইকা কি হবে?”
এ বাক্যকে কেন্দ্র করেই তৈরি হয়েছে রহস্য।
চিরকুটে আরও লেখা ছিল—
“সোহাগীসহ ইচ্ছা মৃত্যু বরণ করবো। আমাদের লাশ যেন ময়নাতদন্ত না হয়। কবর যেন ঘরের পশ্চিম পাশে একসাথে হয়। আমি নিরপরাধী। নিজের জীবন নিজেই দিছি।
আমার পোলার দিকে খেয়াল রাখবেন। মা-বাবা ছাড়া এতিম হইয়া যাবে। আমাদের সবাই মাফ করে দিয়েন। বারো বছর বিয়ে হয়েছে—এখন এমন কেন?”
স্থানীয়দের দাবি, চিরকুটে লেখা প্রতিটি লাইন এখন একেকটি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিচ্ছে—কী এমন সংকট সৃষ্টি হয়েছিল যে সাত বছরের সন্তান রেখে দু’জনই মৃত্যুর পথ বেছে নেবেন?
গ্রামবাসী জানায়, সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনাটি ঘটে। পরে পরিবারেরই এক আত্মীয় ঘরে ঢুকে দু’জনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে চিৎকার করলে স্বজন ও প্রতিবেশীরা লাশ নিচে নামিয়ে আনেন।
নিহত রাকিব-সোহাগী দম্পতির মুজাহিদ নামে সাত বছরের এক ছেলে রয়েছে।
চালিতাবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ দফাদার মোশাররফ হোসেন বলেন, “দুইজনের গলায় ফাঁসের দাগ রয়েছে। আমরা যাওয়ার আগেই পরিবারের লোকজন লাশ নামিয়ে রেখেছিল। স্থানীয়দের কাছ থেকে শুনেছি—স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝামেলা ছিল।
প্রায় ১০-১২ দিন আগেও নাকি বিরোধ হয়েছিল।”
রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম হাওলাদার বলেন, “চিরকুটসহ সব আলামত জব্দ করা হয়েছে। মরদেহ সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। একটি অপমৃত্যু মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।”